একজন মানুষের সৌন্দর্য অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায় চোখের নিচে কালো দাগ এর জন্য। যাকে বলা হয়ে থাকে ডার্ক সার্কেল। প্রায় সকলেই এই সমস্যার সাথে পরিচিত। ডার্ক সার্কেল দেখা দেওয়ার পেছনে বেশ অনেকগুলো কারণ রয়েছে। ঠিক তেমনভাবেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য রয়েছে বেশ অনেকগুলো উপায়। যেমন: একজন বিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করা, পরিমিত পরিমাণে ঘুমানো, সঠিক খাদ্যভ্যাাস ইত্যাদি।

তবে, একেবারে ঘরোয়া কিছু উপাদান ব্যবহারের মাধ্যমে সহজ উপায়েও ডার্ক সার্কেলের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব অল্প কিছুদিনের মাঝেই। জেনে নিন সেই সকল উপাদান এর নাম এবং তাদের ব্যবহারবিধি।

১/ গোলাপের পাপড়ি ও পানি (গোলাপজল)

গোলাপজল ত্বককে কোমল করতে এবং পুষ্টি দিতে সাহায্য করে থাকে। এছাড়াও ত্বকের ফোলাভাব, লালচে ভাব এবং চুলকানির প্রাদুর্ভাব কমিয়ে এনে ত্বকের মাঝে লাবণ্য বৃদ্ধি করে। যেকোন ভালো ওষুধের দোকান থেকেই গোলাপ জল কিনে ব্যবহার করা যায়। তবে ঘরে  তৈরী করে নিলে সেটা বেশী ভালো কাজে দেয়।

যা প্রয়োজন:

–      একটি গোলাপের তাজা পাপড়ি

–      এক গ্লাস গরম পানি

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

গোলাপের পাপড়ি ছিঁড়ে একটি সসপ্যানে নিয়ে তাতে গরম এক গ্লাস পানি ঢেলে দিতে হবে। ঠাণ্ডা হবার জন্য অপেক্ষা করে এরপর গোলাপের পাপড়িগুলো তুলে ফেলে দিতে হবে। এখন এই গোলাপের পানি তুলার বলে লাগিয়ে চোখের নীচের কালো অংশে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে চোখের নীচে এই গোলাপজল লাগাতে হবে।

২/ টমেটোর রস

টমেটো শুধুমাত্র শরীরের জন্যেই নয়, ত্বকের ক্ষেত্রেও দারুণ উপকারী। বিশেষ করে চোখের নীচের ডার্ক সার্কেল দূর করার ক্ষেত্রে খুবই দারুণ কাজ করে। কারণ টমেটো তে রয়েছে ‘লাইকোপেন’। যেটা একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

টমেটো থেকে রস তৈরি করে সেই রস চোখের সমস্যাযুক্ত স্থানে লাগিয়ে ১০ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। এরপর পুরো মুখ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। টানা দুই সপ্তাহের জন্য টমেটোর রস এইভাবে ব্যবহার করলে খুব দ্রুত পরিবর্তন খেয়াল করা যাবে।

৩/ শসা

শশাতে রয়েছে অনেক বেশী পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান। যা ত্বকের জন্যে খুবই উপকারী। একইসাথে শসাতে রয়েছে ত্বকের রঙ ফর্সাকারি উপাদান।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

শসা বেশ মোটা করে কেটে রেফ্রিজারেটরে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিতে হবে। এরপর চোখের ওপর ১০-১৫ মিনিট সময়ের জন্য রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এইভাবে শসা ব্যবহার করতে হবে এক সপ্তাহের জন্য।

৪/ চায়ের লিকার

চায়ে রয়েছে ক্যাফেইন, ট্যানিস এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস। এই সকল উপাদান চোখের ডার্ক সার্কেল এবং ফোলাভাব দূর করার ক্ষেত্রে খুব উপকারী।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

এক কাপ রঙ চা বানিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে। এরপর তুলার বলের সাহায্যে চোখের নীচের অংশে লাগাতে হবে। চায়ের পরিবর্তে টি-ব্যাগও সরাসরি চোখের নীচের অংশে লাগানো যাবে। এরপর ১০-১৫ মিনিট রেখে দিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এক সপ্তাহের জন্য প্রতিদিন এইভাবে চা চোখের নীচের অংশে লাগাতে হবে।

৫/ দুধ ও পাউরুটির মাস্ক

দুধ ত্বকের রঙ ঠিক করতে, ত্বক কোমল করতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। অন্যদিকে পাউরুটিতে থাকে ইষ্ট। যা ভিটামিন-বি তে ভরপুর। ভিটামিন-বি ত্বকের যেকোন ধরণের র‍্যাশের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে থাকে।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

রুটি ও পাউরুটির একটি পেষ্ট তৈরি করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, পেষ্টটি যেন খুব বেশী ঘন না হয়। তৈরিকৃত এই পেষ্ট চোখের নীচের অংশে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট সময়ের জন্য রেখে দিতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

৬/ আলুর রস

আলুর রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি এবং রঙ ফর্সাকারি উপাদান। যে কারণে আলুর রস ডার্ক সার্কেল দূর করার জন্য দারুণ কাজ করে থাকে।

কীভাবে ব্যবহার করতে হবে:

একটি আলুকে গ্রেট (কুচি করে কাটা) করে সেটা থেকে চিপে রস বের করে নিতে হবে। এরপর তুলার বসে আলুর রস নিয়ে চোখের নীচের অংশে লাগিয়ে ১০ মিনিট সময়ের জন্য রেখে দিতে হবে। এরপর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সবশেষে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল চোখের নীচের অংশে লাগিয়ে নেওয়া যায়। টানা দুই সপ্তাহ এই নিয়ম মেনে চললে চোখের ডার্ক সার্কেল অনেকটাই কমে আসবে।